অসামাজিক
বাস আসছে। বাস যাচ্ছে। ঠাসা ঠাসা মানুষ। পোকামাকড়ের মত মানুষ।
কেউ কারো দিকে পর্যন্ত তাকাচ্ছে না।
ছাউনির পাশে কোলে বাচ্চা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এক যুবতী মা। কিছুতেই উঠতে পারছে না বাসে। পুরুষ মানুষদের হুলুস্থুল পেশী-বুহ্যের মধ্যে একটা ছোট্ট দরদী ফাঁক খুঁজে পেতে বারবার ব্যর্থ হয়ে, ধাক্কা ঠেলা, চাপ খেয়ে, শেষে ফিরে এসে দাঁড়িয়ে আছে ছাউনির পাশে;
নিরেট মেঘের দিকে তাকিয়ে থাকা কোন এক ভেজা কাকের মত।
মানুষেরা আর মোটেই সামাজিক মানুষ নেই। ভিড়ের মুখোশের আড়ালে দেখি, প্রত্যেকেই অন্তর্বাসী কুকুর হয়ে উঠছে।
(আজ বাসে করে বাসায় যাওয়া যাবে না)
স্কুটার নিলাম। উঠে পড়লাম একটা সিগারেট ধরিয়ে। ধরাতে গিয়ে মনে হলো আমিতো খুব সহজেই এই বিপন্ন মা ও শিশুকে ডেকে নিতে পারতাম স্কুটারে। কিন্তু নিলাম না। নেয়া যায় না। নিয়ম নেই। আমাদের সমস্ত শরীর মাছির মত সন্দেহের চোখে ভরে গেছে। আর সহানুভূতি খুঁড়ে এই কূট ও ক্রূর সময়ে ঝামেলা বাড়াতে কে চায়! কেউ না। কেউ না।
খুব কুৎসিত এক ব্যবস্থাপনার জীব হয়ে গেছি। সমাজের দাসানুদাস আমি
স্কুটারে চেপে একা একা বাড়ি ফিরি।
5 Comments
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.
Md Zaker Hayat Khan [ Zaker Aditya ] [ জাকের আদিত্য ]
অপ্রিয় সত্য। অসাধারণ লেখনী।
হৈমন্তীকা
শুভকামনা
আব্দুল মজিদ মারুফ
সুন্দর
Drako Shajib
সমাজ কে এক অন্যরকম ভাবে দেখিয়ে দিলো গল্পটি!
“আমাদের সমস্ত শরীর মাছির মত সন্দেহের চোখে ভরে গেছে।” এই ভাবনাটার মুখোমুখি বেশ কয়েকবার হয়েছি। এমনকি, সাহায্য করতে গেলেও এই ভাবনাটা চলে আসে কিন্তু। মানুষ মানুষে এই দূরত্ব ঘুচে যাক, মানুষ আরো বেশী মানবিক হয়ে উঠুক এই কামনা করি।
Sohel Khondokar
কঠিন বাস্তবতা।