
বিতর্ক আর কেলেঙ্কারির কান চলচ্চিত্র উৎসব
সবচেয়ে বিখ্যাত আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ইতিহাস জুড়ে পাবেন গ্লিটজ এবং স্ক্যান্ডালের সেরা কিছু কাহিনী।
‘কান উৎসব’ বছরের পর বছর ধরে গ্ল্যামার এবং শৈল্পিক প্রকাশের সমৃদ্ধ ইতিহাস বহন করে; তবে প্রচুর কেলেঙ্কারি এবং বিতর্কও রয়েছে উৎসবকে ঘিরে। বিখ্যাত রেড কার্পেটে ‘সাল্লে লুমিয়েরে’, যেখানে স্বপ্ন তৈরি হয় এবং ভেঙে যায়, সেখানে পদচারণার ইতিহাসে অনুপ্রেরণা খু&জে পান – বিশ্বের সবচেয়ে প্রিয় সেই চলচ্চিত্র উৎসব সম্পর্কে কিছু চমকপ্রদ তথ্য তুলে ধরা হলো৷
‘কান’ সম্পর্কে ফরাসি চিত্রশিল্পী পিকাসো বলেছেন, ‘আপনি কখনও রূপকথার প্রাণী, সেন্টোর (centaur) বা অন্যান্য পৌরাণিক প্রাণী অন্য কোথাও দেখবেন না, তারা যেন কেবলমাত্র ফ্রান্সের এই অংশেই [যেখানে কান অনুষ্ঠিত হয়] বাস করেন।
‘কান উৎসব’ বছরের পর বছর ধরে গ্ল্যামার এবং শৈল্পিক প্রকাশের সমৃদ্ধ ইতিহাস বহন করে; তবে প্রচুর কেলেঙ্কারি এবং বিতর্কও ঘটেছে এই বিখযাত উৎসবকে ঘিরে। বিখ্যাত রেড কার্পেট ‘সাল্লে লুমিয়েরে’, যেখানে স্বপ্ন তৈরি হয় এবং ভেঙে যায়, সেখানে পদচারণার ইতিহাসে অনুপ্রেরণা খুঁজে পান অনেকে – বিশ্বের সবচেয়ে প্রিয় সেই চলচ্চিত্র উৎসব সম্পর্কে কিছু চমকপ্রদ তথ্য তুলে ধরা হলো৷
১. ‘ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে’র উপর ক্রমবর্ধমান ফ্যাসিবাদী প্রভাবের প্রতিবাদে ১৯৩৯ সালে ‘কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’ শুরু করা হয়। আগের বছর, সবার পছন্দের ছবি না হলেও, লেনি রিফেনস্টাহল এবং লুসিয়ানো সেরার ‘অলিম্পিয়া’ এবং গোফ্রেডো আলেসান্দ্রিনির ‘পাইলোটা’কে প্রধান পুরস্কার ‘মুসোলিনি কাপ’ ১৯৩৮ সালে দেওয়া হয়েছিল ভেনিস ফেস্টিভালে। ফরাসী কুটনৈতিক Philippe Erlanger এই ঘটনায় প্রচণ্ড রেগে যান এবং সিদ্ধান্ত নেন যে আরেকটি উৎসবের আয়োজন করা হবে, যেটিতে থাকবে না কোনোরকমের রাজনৈতিক চাপ, সেন্সরশিপের কাচি চালানো, অথব অন্য কোনো বাধ্য বাধকতা। সেই থেকেই পরের বছর, ১৯৩৯ এ কান উৎসবের যাত্রার শুরু।
২. স্রেফ “আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব” নামে একটি উনুষ্ঠান ‘বিয়ারিটজে’ অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল । কিন্তু নানা গ্রুপ এটিকে ‘কানে’ করার জন্য প্রচারণা চালায়। পরে অবশ্য কানেই এটি সরিয়ে নেয়া হয়। প্রাথমিক দিনগুলিতে ভ্যেনু নিয়ে এই গণ্ডগোল দাগ হিসাবে যেন কানের গায়ে লেগে আছে।
৩. উৎসবটি ১৯৩৯ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হবার কথা ছিল। কিন্তু এর মধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয় এবং কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত এই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধন করা সম্ভব হয়নি। তখন নির্দিষ্ট কোনো ভ্যেনু ছিল না বিধায় একটি ক্যাসিনোতে ছবিগুলির স্ক্রিনিং অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ২০০ সালে একটি শ্রদ্ধা প্রকাশার্থে অনুষ্ঠানে রেট্রোস্পেক্টিভ পুরষ্কার দেওয়া হয় সেইসব ছবিকে, যা ১৯৩৯ সালে প্রদর্শিত হতে পারেনি।
৪. প্রথম কয়েকটি কান উৎসবে, প্রতিযোগিতার চেয়ে উদযাপন ছিল গুরুত্বপূর্ণ। বেশিরভাগ চলচ্চিত্রই প্রদর্শিত হয়েছিল এবং কিছু না কিছু পুরষ্কার জিতেছিল। এগারোটি চলচ্চিত্র ১৯৪৬ সালে ‘গ্রাঁ প্রি’ পেয়েছিল। ১৯৫০-এর দশকে যখন উৎসবটি সত্যিই শুরু হয় এবং পরিচিতি অর্জন করে নেয়—ক্যারি গ্রান্ট, সোফিয়া লরেন এবং ব্রিজিট বারডটের মতো তারকাদের উপস্থিতিতে ঝলমলে হয়ে উঠেছিলো উৎসবটি— এবং এটি তখন থেকে আরও প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠতে শুরু করে।
৫. ১৯৪৯ সালে, বেশ কয়েকটি ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের ঘটনা ঘটে, যা ‘অ্যাফেয়ার অফ দ্য টাইস (Ties)’ নামে পরিচিত। চমৎকার আবহাওয়ার কারণে, অনেক অংশগ্রহণকারী স্ক্রিনিংয়ের মধ্যে সূর্য-স্নান করতে যেতেন। ফলস্বরূপ, আয়োজক কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় যে, কিছু কিছু স্ক্রিনিংয়ের সময় টাই পরতে হবে, ধোপদুরস্থ পোষাক পরতে হবে [যেন সকলে সূর্যস্নান ব্যাতিরেকে ভালো পোষাক পরে অনুষ্ঠানে যোগদান করতে অনুপ্রাণিত হন]। এদিকে এই ঘোষণায় কিছু কিছু পরিচালক এমন ধারণা করে বসেন যে, “টাই পরা বাধ্যতামূলক” – এমন ছবিগুলি যেন বেশি সম্মানিত হতেছে আয়োজকদের দ্বারা। ফলে, এই জাত ভেদ আরোপের কারণে তারা রুষ্ট হয়ে উঠেন।
৬. উৎসবের প্রতিষ্ঠিত নীতি থাকা সত্ত্বেও, ঠান্ডা যুদ্ধের সময় সংবিধানে একটি নিবন্ধ যুক্ত করা হয়, যা একধরনের কূটনৈতিক সেন্সরশিপের অনুমতি দেয়৷ ১৯৫০ থেকে ১৯৫৬ সালের মধ্যে উত্তেজক চলচ্চিত্রগুলিকে তাদের সিনেমার গুণমান সত্ত্বেও প্রতিযোগিতা থেকে সরানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। হেলমুট কাউটনার পরিচালিত Ciel sans étoiles, ১৯৫২ সালে প্রতিযোগিতা থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল, যাতে উৎসবে সোভিয়েত প্রভাব না পড়ে; এবং পশ্চিম জার্মানি দূতাবাস অনুরোধ করে যে, ‘নাইট অ্যান্ড ফগ’—অ্যালাইন রেসনাইসের একটি ডকুমেন্টারি, ১৯৫৬ সালে ফেস্টিভ্যাল থেকে প্রত্যাহার করা হোক। তখন শেষপর্যন্ত একটি সমঝোতা হয়, যার মাধ্যমে ছবিটিকে প্রতিযোগিতার বাইরে স্ক্রিনিং করা হয়েছিল।

emilio insolera;carola insolera
৭. কান ফেস্টিভালের ড্রেস কোড অত্যন্ত কঠোর। কেউ-ই এই কোড ভনগ করে প্রবেশের অনুমতি পান না। কিন্তু ফরাসী চিত্রকর পিকাসোর জন্য ১৯৫৩ সালে এই নিয়মটি শিথিল করা হয়েছিল। হেনরি-জর্জেস ক্লোজট নির্মিত ‘দ্য ওয়েজেস অফ ফিয়ার’ ছবিটির স্ক্রিনিঙের সময় পিকাসোকে ভেড়ার চামড়া নির্মিত একটি কোট পরে অনুষ্ঠানে ঢোকার অনুমতি দেয়া হয়। ক্লোজট পরবর্তীকালে শিল্পী পিকাসোকে নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি তৈরি করেন, ‘দ্য মিস্ট্রি অফ পিকাসো’ শিরোনামে, যেটি ১৯৫৬ সালে বিশেষ জুরি পুরস্কার লাভ করে।
৮. গড়ে প্রায় ৪,৫০০ সাংবাদিক উৎসবে উপস্থিত হন কানে—অলিম্পিকের পরে দ্বিতীয় বৃহত্তম মিডিয়া কভারেজ পেয়ে থাকে এই ‘কান’ ফেস্টিভাল। নিজের কিংবদন্তীতূলয় ছবি (ফটোগ্রাফ) তোলার জন্য এটি একটি লোভনীয় অনুষ্ঠান। অনেকেই এই সুযোগটি নিতে চান। ১৯৫৪ সালে উৎসব চলাকালে সমুদ্র সৈকতে ব্রিটিশ অভিনেত্রী সিমোন সিলভা-র টপলেস ছবি তুলতে গিয়ে হুড়োহুড়ি করে একাধিক পাপারাজ্জি আহত হন। পরবর্তীকালে সিলভাকে অনানুষ্ঠানিকভাবে ‘মিস ফেস্টিভ্যাল ১৯৫৪’ পদবী দেয়া হয়েছিল; কিন্তু তার এই ক্রিয়াকলাপ অশ্লীল, প্রচার-ক্ষুধার্ত এবং উৎসবের নীতি পরিপন্থি বলে বিবেচিত হওয়ায় কানের আয়োজকদের পক্ষ থেকে তাকে পরে চলে যেতে বলা হয়েছিল।
৯. Palme d’Or ১৯৫৫ সালে তৈরি করা হয়েছিল। উৎসব আয়োজকরা ট্রফি ডিজাইনে প্রতিযোগিতা করার জন্য বেশ কয়েকটি জুয়েলার্সকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। মূল বিজয়ী ছিলেন প্যারিসীয় জুয়েলারি ‘লুসিয়েন লাজন’। ট্রফিটি তখন থেকে বেশ কিছু নকশা সংশোধনের মধ্য দিয়ে গেছে। প্রতি বছর, একাধিক বিজয়ী থাকলে, বা একটি ট্রফি ভেঙে গেলে দুটি রিজার্ভ ‘’পাম ডি অর’’ তৈরি করা হয়।
১০. ১৯৬৮ সালে একদল পরিচালক পুরো ফ্রান্স জুড়ে ছাত্র বিক্ষোভের সাথে সংহতি প্রকাশ করে উৎসবটিকে স্থগিত করে দেয়। অন্যান্যদের মধ্যে, Jean-Luc Godard, Louis Malle এবং François Truffaut মিলে কার্লোস সৌরার ছবি ‘Peppermint Frappe’-এর পর্দা উঠতে দিতে অস্বীকৃতি জানান এবং পরবর্তীতে এই ছবির স্ক্রিনিং বন্ধ করে দেওয়া হয়।
১১. ১৯৭১ সালে, ‘দ্য ম্যারিড কাপল অফ দ্য ইয়ার টু’ (টু অর্থাৎ ১৯০২ সাল), জাঁ-পল বেলমন্ডো অভিনীত একটি রোমান্টিক কমেডি, উৎসবের শেষ দিন প্রদর্শিত হয়। যে যে দম্পতি প্রমাণ করতে পারেন যে তাঁরা একেবারে সেই ১৯০২ সালেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন, তাদেরকে আলাদাভাবে নিমন্ত্রণ জানানো হয় সেদিন ছবিটি দেখতে।
১২. ১৯৭৫ সালে, পল নিউম্যানের একটি আচরণ ফটোগ্রাফারদের ধর্মঘট শুরুর কারণ হিসাবে দেখা দেয়। যাত্রাপথে ক্লান্ত হয়ে পড়লে নিউম্যান “আগমনী পোজ” দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরবর্তিতে সন্ধ্যা বেলায় যখন তিনি সিঁড়ি বেয়ে উঠে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেন, ফটোগ্রাফাররা প্রতিবাদ হিসাবে তাঁর পায়ের কাছে যার যার ক্যামেরা রেখে দেন। ১৯৮৩ সালে ‘ইসাবেল আদজানি’-ও একই ঘটোনার সম্মুখীন হন।
১৩. ১৯৮৭ সালে, ‘আন্ডার দ্য সান অফ শয়তানে’র জন্য পুরস্কার সংগ্রহ করতে গিয়ে মরিস পিয়ালাট প্রবলভাবে দর্শকদের দুয়ো-ধ্বনির স্বীকার হন। কিন্তু এক কিংবদন্তি প্রতিক্রিয়ায় তিনি উদ্ধত মুষ্টি দেখিয়ে মজাদারভাবে এর উত্তর দেন। তিনি বেশ পুরাতন ডিজাইনের একখানা কার্ডিগান পরে গিয়েছিলেন। কার্ডিগানের পিছনে নিজের মুখ লুকিয়ে তিনি একটা মুষ্টিবদ্ধ হাত উপরে তুলে সবাইকে দেখাতে থাকেন। ভাবখানা এমন যে, দর্শকরা তাকে পছন্দ না করলে তাতে কিছু যায় আসে না, কারণ তিনি নিজেও দর্শকদের পছন্দ করেন না।
১৪. কান উৎসবে প্রচুর প্রচারণা হয়। আবার প্রচারণার সময় নানারকম স্টান্ট-পূর্ণ ঘটনাও রাস্তাঘাটে মঞ্চস্থ করা হয়। ২০০৯ সালে, বেলজিয়ান ব্ল্যাক কমেডি “দ্য মিসফরচুনেটস”-এর প্রচারের জন্য ছবিটির পুরো কাস্ট, অর্থাৎ অভিনেতা, অভিনেত্রীরা কানের কেন্দ্রে নগ্ন হয়ে সাইকেল চালানোর সিদ্ধান্ত নেন। মুল ছবিতেও এইরকমের একটা দৃশ্য ছিল। ছবিটির পরিচালক ফেলিক্স ভ্যান গ্রোনিঞ্জেন পরবর্তীকালে বলেন যে, সেইদিন একটি মোটরসাইকেল করে সেই দলের পিছু পিছু তিনি ভ্রমণ করছিলেন, তিনি সাথে বয়ে বেড়াচ্ছিলেন তাদের যাবতীয় আন্ডারওয়্যারগুলি। বাই চান্স পুলিশ দ্বারা তারা গ্রেফতার হন, সেই সময় তিনি আন্ডারওয়্যারগুলি দ্রুত সরবরাহ করবেন।
১৫.কানে ফিল্ম দর্শকদের চিৎকার করা, সেইসাথে করতালি দেওয়া কিংবদন্তি তুল্য। কিন্তু ২০০২ সালে, Gaspar Noé-র ‘Irreversible’ এতটাই মর্মান্তিক হয়ে উঠেছিল যে, এটি উৎসবের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ওয়াক-আউটগুলির একটি জন্ম দেয়; ২৫০ জন লোক স্ক্রিনিং ছেড়ে চলে যান, এবং ফায়ার ওয়ার্ডেনরা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ২০ জনকে অক্সিজেন দিতে বাধ্য হয়েছিল।
১৬. লার্স ভন ট্রিয়েরের বিতর্কিত ‘অ্যান্টিক্রিস্ট’কে ২০০৯ সালে বিশেষ জুরি দ্বারা একটি অনানুষ্ঠানিক অ্যান্টি-পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল। পুরুষ্কারের মাধ্যমে তারা দেখান যে, যারা খ্রিস্টবিরোধী তারাই সবচেয়ে যৌনতাবাদী।
১৭. ২০১৩ সালে ফেস্টিভ্যালের সময় হোটেলগুলিতে গয়না লুটপাটের একটি ঢেউ ছিল, যেখানে অনেক ধনী এবং বিখ্যাত ব্যক্তি ‘কানে’ যোগ দেওয়ার সময় থেকেছিলেন। চোরেরা ১৯৫৫-এর ‘টু ক্যাচ এ থিফ’ সিনেমার দ্বারা বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত হয় ৷ কার্লটন হোটেলে ‘এক্সট্রাঅর্ডিনারি ডায়মন্ডস’ শিরোনামের একটি প্রদর্শনী থেকে ১০৩ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের গহনা চুরি হয়। চোর এখনো ধরা পড়েনি।
১৮. ২০১৩ সালে, একটি ‘ত্রিমুখী পাম ডি’অর’ প্রথমবারের মতো পুরুষ্কার হিসাবে প্রদান করা হয়। ‘ব্লু ইজ দ্য ওয়ার্মেস্ট কালার’ শিরোনামের সিনেমা এই পুরষ্কার পায় । পরিচালক ‘আবদে লাতিফ কেচিচে’ এবং তারকা ‘অ্যাডেল এক্সার্কোপোলোস’ এবং ‘লেয়া সেডক্স ‘—তিন জন মিলে এই পুরস্কারটি পান; কারণ বিচারকরা বিশ্বাস করেছিলেন যে, একটি সামান্য ‘কাস্ট পরিবর্তন’, অর্থাৎ, অভিনেতা, অভিনেত্রী পরিবর্তন করলেই ছবিটি সফল হতো না। পরিচালক কেচিচে এই পুরষ্কারকে অপমানজনক হিসাবে গ্রহণ করেন এবং তার পরবর্তী চলচ্চিত্রের অর্থায়নের জন্য ট্রফিটা নিলামে তুলেন।
১৯. কানে নিরাপত্তা প্রসিদ্ধভাবে কঠোর—উপস্থিত প্রত্যেকের অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট ব্যাজ থাকতে হবে। কিন্তু ব্যতিক্রম আছে। ২০১৩ উৎসব গসিপের জন্য দুর্দান্ত এক বছর ছিল। ‘গ্যাংনাম স্টাইল’ খ্যাত দক্ষিণ কোরিয়ান র্যাপার সাই (psy) নানা কায়দায় লুকিয়ে লুকিয়ে বিভিন্ন পার্টিতে ঢুকে পরেন এবং ভক্তদের সাথে ফটো তোলেন। পরে হোটেলের ম্যানেজারের কাছে ধরা পড়ে প্রতারক হিসাবে চিহ্নিত হন।
২০. যদিও জুতার উচ্চতা বা শৈলি ভেদে কোন উৎসবে প্রবেশাধিকারে বাধা দেবার নিয়ম নেই, তথাপি ২০১৫ সালে তাদের হিল-বিহীন ফ্ল্যাট জুতোর উপর ভিত্তি করে অনেক মহিলাকে উৎসবে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। এই ঘটনাকে পরে ‘হিলগেট’ বলা হয়েছিল। প্রতিক্রিয়া হিসাবে, ডেনিস ভিলেনিউভ এবং সিকারিও পুরুষ কাস্ট হিসাবে সিঁড়ি বেয়ে ওঠার জন্য হিল পরার ঘোষণা দিয়েছিল, কিন্তু যদিও শেষপর্যন্ত তা তারা করেন নি। আবার, অপরদিকে জুলিয়া রবার্টস এবং ক্রিস্টেন স্টুয়ার্টের মতো অভিনেত্রীরা এই ঘটনার প্রতিবাদে তাদের হিল জুতা খুলে নিয়ে লাল গালিচায় খালি পায়ে হাঁটেন। সাথে সাথে এ নিয়ে কয়েকটি হাই-প্রোফাইল প্রতিবাদও হয়।
২১. অনেক আগে থেকেই ফেস্টিভ্যালের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর থিয়েরি ফ্রেমাক্স লাল গালিচায় সেলফি তোলাকে নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা করে আসছেন। তিনি বলেন যে, কাউকে সরাসরি নিষেধ করার ক্ষমতা তার নেই, তবে সেলফি তোলার কারণে হাঁটাহাঁটিতে অনেকে বাধার সম্মুখীন হন এবং অনর্থক জটলা তৈরী হয়। এগুলি দূর করতে চান তিনি। তিনি সেলফি ছবিকে “হাস্যকর এবং উদ্ভট” বলে অভিহিত করেছেন এবং মজা করে সবাইকে সতর্ক করেন: “আপনাকে সেলফিতে যতটা কুৎসিত দেখায়, ততটা আপনি না।”
২২. প্রতি বছর, একটি ‘পাম ডগ’ (পাম কুকুর) পুরস্কার দেওয়া হয় সেরা অন-স্ক্রিন হাউন্ড (হাউন্ড কুকুর)-কে। পূর্ববর্তী বিজয়ীদের মধ্যে Belleville Rendezvous ছবি থেকে Bruno (কুকুরের নাম), Marie Antoinette থেকে Mops (কুকুরের নাম) এবং Ones Upon a Time in Hollywood-এর ‘ব্র্যান্ডি’ (কুকুর) অন্তর্ভুক্ত। ২০১৮ সালের ‘পাম ডগ’ পুরষ্কারের অংশ হিসাবে একটি ‘আন্ডারডগ’ বিভাগও চালু হয়, যা ‘একটি কুকুর, মানুষ বা ‘আন্ডারডগ’ হিসাবে প্রতিকূলতার মুখোমুখি হওয়ার সফল চরিত্র রয়পায়নে অন্য কোনো প্রাণী’-কেও দেওয়া হতে পারে।
২. আশ্চর্য, আশ্চর্য – ৬০ মিটার কার্পেটে আচ্ছাদিত ‘প্যালেই ডি ফেস্টিভাল’এ ২৪টি ধাপ রয়েছে। কার্পেটটি দিনে তিনবার পরিবর্তন করা হয়, যাতে এটি বিখ্যাত সব মানুষের পায়ের নীচে সতেজ দেখায়, যখন চরিত্ররা ধাপে আরোহণ করে এবং ফটো তোলেন। উৎসবের পরিবেশগত প্রভাব মোকাবেলায়, মিডিয়ার চাপে , ২০১৬ সাল থেকে কার্পেটটি সম্পূর্ণরূপে ‘পুনর্ব্যবহারযোগ্য’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়।
ছবি: Georges Biard, CC BY-SA 4.0, via Wikimedia Commons Georges Biard, CC BY-SA 4.0, via Wikimedia Commons Georges Biard, CC BY-SA 3.0, via Wikimedia Commons Johnny Dalla Libera, Photographer, SGP srl, CC BY-SA 4.0, via Wikimedia Commons Alexgrim, CC BY-SA 4.0, via Wikimedia Commons Fandemiss75, CC BY-SA 4.0, via Wikimedia Commons GabboT, CC BY-SA 2.0, via Wikimedia Commons Plyd, CC BY-SA 4.0, via Wikimedia Commons Joan Hernandez Mir, CC BY 2.0, via Wikimedia Commons Bollywood Hungama, CC BY 3.0, via Wikimedia Commons
4 Comments
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.
SHABBIR AHAMED
সকলকে শুভেচছা ও ধন্যবাদ জানাই
SHABBIR AHAMED
সকলকে ধন্যবাদ ও শুভেচছা জানাই
SHABBIR AHAMED
শুভকামনা ও অনিনন্দন
Nilufar Ghani
ধন্যবাদ।