মুক্তগদ্য

মেট্রোপলিটান। জানুয়ারি,২০২০

মেট্রোপলিটান। জানুয়ারি,২০২০

কেদারনাথ রোড দিয়া রাত্তিরে হাঁটবার অবকাশ নাই। তবে, আজকাল হাঁটা যাইতেসে । এর সঠিক কারণটা ভাবতে ভাবতে আমি আমার লক্ষ্যের দিকে আগাই, বাস স্ট্যান্ড যাবো। প্রতি রাত্তিরেই- আমি এমন যাই। কেদারনাথ মেইনরোড কতগুলো শাখায় ভাগ হয়ে যাবার মাথায় আমার বাড়ি। এরপর দীর্ঘ সুনসান আবাসিক টাইপের রাস্তা- কালিবাড়ি বাজার আর, রেলিগেট স্ট্যান্ডকে ধইরা রাখসে। এই রাস্তাটা প্রাচীন। অনেক আগেকার। শোনা যায়, এই কেদারনাথ রোডের ... »

কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অসমাপ্ত আত্মজীবনী – ১১

কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অসমাপ্ত আত্মজীবনী – ১১

কম্পিউটার স্বাগতম   আমার প্যাকেট থেকে সিগারেট অফার করায় তিনি তা আগ্রহের সঙ্গেই গ্রহণ করলেন। তাঁর মুখের সিগারেটে অগ্নিসংযোগ করলাম, তিনি আমার মুষ্টিবদ্ধ হাতে টোকা দিয়ে ধন্যবাদ দিলেন। বুঝতে পারলাম, ভদ্রতাজ্ঞান টনটনে। গতরাতে শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের বাসায় তাকে যেমনটি দেখেছিলাম, আজকে বেশভূষায় তার সম্পূর্ণ বিপরীত- ক্লিন শেভড বিশাল এক ব্যক্তিত্ব! মনে হচ্ছে, কোনো অনুষ্ঠানের সভাপতি অথবা প্রধান অতিথি সেজে ... »

শাহীন আপা

শাহীন আপা

“আর তাছাড়া ১৪/১৫ বছর তো অনেক লম্বা সময় আর আমরা দুইজন তো আগের দুইজন নেই।” চারপাশে বড় বড় কলোনি বাড়ির মধ্যে আমরা তৈরি করে নিয়েছি আমাদের ‘কৃষ্ণচূড়া চত্বর’। একটা বিল্ডিংয়ের পেছনে খালি পড়ে থাকা জংলা জায়গা পরিষ্কার করে, চারপাশে বেড়া দিয়ে, বেড়ার ভিতরের পাশে লাইন ধরে লাগানো বিভিন্ন ধরনের কুল গাছ। এছাড়া চত্বরটা ভরে আছে আড্ডার প্রত্যেক সদস্যের বাধ্যতামূলক ডোনেশন দেয়া মেহগনি,কড়ই, ইত্যা... »

বেগমবাগ

বেগমবাগ

আজকাল সবকিছু ঝাপসা না হলে নুরুল সত্যটা বলতে পারে না। চারপাশটা ঝাপসে হতে তার অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘ ১৬৮ ঘণ্টা। সাপ্তাহিক ছুটির আগের দিন লাঞ্চের পর থেকে কিছুতেই তার অফিসে মন টেকে না। খাবারও ঠিকমতো খায় না। পেট ভরা থাকলে যদি ঝাপসা কম হয়! আকাশটা আজ অভিমানী প্রেমিকার মুখের মতো অন্ধকার। নুরুলের বুক দুরু দুরু করে। অনেকটা পথ হাঁটতে হবে। এই সময়ে রাস্তায় খুব জ্যাম থাকে। সঙ্গে ছাতা নেই। ভিজে গেলে নির্ঘাত জ্বরে... »

কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অসমাপ্ত আত্মজীবনী – ১০

কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অসমাপ্ত আত্মজীবনী – ১০

শ্রীমতি গীতা বন্দ্যোপাধ্যায়   গতরাতে কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের বাসা থেকে আমাকে সাদার স্ট্রিটের হোটেলে নামিয়ে সুভাষ একই ট্যাক্সিতে বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন। রাত অনেক হওয়ায় তাঁকে আর হোটেলে ঢুকতে বলিনি। যাওয়ার সময় তিনি তাঁর বাসার ঠিকানা আর ফোন নম্বর দিয়ে গিয়েছিলেন, আর বলেছিলেন সকালে এসে আমাকে কোথায় যেন নিয়ে যাবেন। হয়তো কোনো এক সাহিত্য সভায়। আমি ঘুম থেকে উঠে তৈরি হয়ে বসে বসে ভাবছি, কলকাতা এসে আমার প্রথ... »

চাবির কারবারি

চাবির কারবারি

নৈজ‍্যা আমাদের ছেলেবেলার বন্ধু। মহল্লায় ওদের টিনের ঘর। বাপ-ভাইরা দোকান করে। অথচ ও একটা পাক্কা চোর। আমরা যখন এইট/নাইনে পড়ি ও তখন চুরি বিদ‍্যায় হাত পাকায়। আমরা জানতে চাই, এই কাজ শিখলি ক‍্যামনে? ওস্তাদ আছে। কে তোর ওস্তাদ? পরিচয় করায়া দে। গোমর ভাঙা নিষেধ। চোর হলেও নৈজ‍্যা বন্ধু প্রিয়। আমাদেরকে এটা-ওটা খাওয়ায়। চাইলে ধারও দেয়। ওকে নৈজ‍্যা ডাকি বটে, ভালো নাম নজরুল। নামে... »

জৌলুসী বেওয়া ও চালের পোকা

জৌলুসী বেওয়া ও চালের পোকা

জৌলুসী ঘরের দাওয়ায় বসে চাল বাছে। চালে বিস্তর পোকা। যুদ্ধের পর রিলিফের চাল আসত, সে চালে বিস্তর পোকা থাকত। কিন্তু এখন তো নতুন ধান, নতুন চাল, ঢেকি ছাটা না মেশিনে ভাঙানো সাদা ধবধবে চাল। কিন্তু চালের মধ্যে সেই যে বড় বড় সাদা পোকা এসে ঢুকল এখনও বের হয় নি। জৌলুসী বেওয়া ঘরের সামনের এক চিলতে মাটিতে পা ছড়িয়ে বসে। চালের মধ্যে এত পোকা? একটা পোকা বেছে তুলতে না তুলতে চোখের সামনে হিজিবিজি আরও সব পোকা এসে হাজির হয়... »

কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অসমাপ্ত আত্মজীবনী – ৯

কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অসমাপ্ত আত্মজীবনী – ৯

মুজিববাদ   দিল্লী থেকে যখন প্রতীক্ষার সেই ডাক এলো, সঙ্গে সঙ্গে কলকাতার তল্পিতল্পা গুটিয়ে বাগদাদে ফিরে এলাম। এখানেও আমার একটা বুড়ো ভাম একান্ত বন্ধু জুটেছিলো, যাঁর সঙ্গে দিবানিশি মদ্যপান আর নাইট ক্লাবে শ্রীলঙ্কান অথবা ফিলিপিনো মেয়েদের উদোম বুকে মাথা গুঁজে দু’জনে কী যেন খুঁজতাম আর দেশ জাতির ভবিষ্যৎ নিয়ে অহর্নিশ চিন্তাভাবনা করতাম। আমার কলকাতার অভিজ্ঞতা শুনতে বুড়োর আগ্রহের কোনো ক্লান্তি নেই।... »

কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অসমাপ্ত আত্মজীবনী – ৮

কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অসমাপ্ত আত্মজীবনী – ৮

সুকান্ত সমগ্র   শুরুতেই লিখেছিলাম, কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে সুভাষ আমাকে প্রায় অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে শ্রীমতী গীতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খোঁয়াড়ে বন্দি করে ফেলেছিল। গীতার যৌবনের ফরাসী সৌরভ আর সিঙ্গাপুর-রেঙ্গুনের বাল্যস্মৃতিতে মন্ত্রমুগ্ধ আমার মন তখন উল্লিখিত খোঁয়াড়ের সঙ্গে আমৃত্যু বন্ধন খুঁজছিলো। আমার হাতে তখন সময় ও পয়সা দুটোই ঝনঝন করছিলো। দিল্লী থেকে ডাক এলেই ফিরে যেতে হবে, তার পরেরটুকু জানা... »

হাউজ হাজব‍‍্যান্ড

হাউজ হাজব‍‍্যান্ড

পান্থপথের ফুটপাত দিয়ে যাচ্ছিলাম। ফার্নিচারের দোকান থেকে কে যেন ডাক দেয়–স‍্যর, দাঁড়ান…। আরে আবু মিয়া! এখানে কী করছো? ডাইনিং টেবিল কিনতে আইছি, স‍্যার। কিন্তু এতো চড়া দাম! মনে হইতাছে, কাওরান বাজার থেইকা শীতল পাটি লয়া যাই। তুমি গরিব মানুষ। টেবিল দিয়ে কী করবা! কি যে কন, স‍্যার! আমার ওয়াইফ পিংকি বেগম ঝাকানাকা গার্মেন্টসের সুপারভাইজার। তার একটা স্টাটাস আছে না! তার মানে, ত... »

Skip to toolbar