মুক্তগদ্য

Photo By: Jr Korpa | Unsplash

টিয়া পাখি

ফ্ল্যাটবাড়ির জানালায় ঝুলন্ত খাঁচায় টিয়াপাখি। আমি ওকে কাঁচামরিচ দেই। কিন্তু সে খায় না। মরিচগুলি রোদে শুকিয়ে চটচট করে। পচে গন্ধ ছড়ায়। টিয়াপাখির গায়ের গন্ধের সাথে মরিচপচা গন্ধ মিলেমিশে যায়। জানালার গ্রিল থেকে ঝুলছে খাঁচাটি। বাইরে দূরে গলির অন্যপাশে আমগাছ। ডানদিকে গার্মেন্টসের ছাদ। আমার টিয়াপাখি মরিচ খায় না। চাল খায় না। শুধু পানি খায়। পানি খেতে খেতে শুকিয়ে ছোট হতে থাকে। অগত্যা একদিন খাঁচার দরজা খুলে দ... »

গাদলা

গাদলা

হোক না তা বানানো, তবু তো নদীর শব্দ; খুব খুশ! ১৯৩৮ এর সেই বিকাল – তুমুল বৃষ্টি উপেক্ষা করে দশবারোজনের একটা দল উৎকণ্ঠিত চিত্তে স্টেশানের প্লাটফর্মে সমিতির ভাবমূর্তি নিয়ে যৎপরনাস্তি উদ্বিগ্র। সভাপতি স্বয়ং উপস্থিত, যদিও তাঁর নিমটাকটাকে প্রবল অস্থিত স্বেদ চকচকে করে তুলেছে; তিনি হুঁশিয়ার লোক সন্দেহ নাই, সন্দেহ পুরাদলটার বেহুঁশামিতে। সবাই সাহিত্য অন্তপ্রাণ; কিন্ত আজকের ছোট্ট এই রেলথামার সেডটার নিচে যে... »

অষ্টপ্রহর আনাগোনা ১৫

অষ্টপ্রহর আনাগোনা ১৫

ক্যামেলিয়া ডান হাত বাড়িয়ে দিয়ে রনিতাকে কাছে ডাকলেন। বললেন, -কাল তোমার জন্মদিন ছিল, ছোট্ট একটা গিফট। বলে রঙিন মোড়কে বাঁধা একটা প্যাকেট রনিতার হাতে তুলে দিলেন। বিস্মিত রনিতা বলল, -অনেক ধন্যবাদ। আমি কী বলব ভেবেই পাচ্ছি না। স্মিতমুখে ক্যামেলিয়া বলেন, -কিচ্ছু বলতে হবে না। চলো গল্প করি খাবার আসতে আসতে। আমার ছেলেকে দেখে কাল একটু অবাক হয়েছ, তাই না? -হ্যাঁ, কিছুটা। আগে কখনো আপনার মুখে ছেলের কথা শুনিনি৷ -হু... »

কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অসমাপ্ত আত্মজীবনী – ১

কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অসমাপ্ত আত্মজীবনী – ১

কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অসমাপ্ত আত্মজীবনী / ইঁদুর মারার ওষুধ খেয়ে বিড়াল মারা গেছে! ইঁদুর মারার ওষুধ খেয়ে বিড়াল মারা গেছে! বছর চারেক আগে কলকাতায় কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়, ৫/বি ডা. শরৎ ব্যানার্জি রোডের ঠিকানায় বিড়ালগুলোকে দেখতে গিয়ে দেখি অনেকগুলো বিড়াল! এত বিড়ালের খাবার জোটাতে পুপে হিমশিম খাচ্ছে। ঢাকায় ফিরে ‘কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় বিড়াল সংরক্ষণ কমিটি’ করে দিই। কুমারখালীর বীর মুক্তিযোদ্ধা সাত্তার ভ... »

বই মেলাতে

বই মেলাতে

বই মেলাতে গেলাম গত সন্ধ্যায় সোমার সাথে। সুজন এক পুলিশের কাছে সৌজন্যমূলক মাফ টাফ চেয়ে ঢুকলাম বেরোনোর পথ দিয়ে। গেছিলাম দোয়েল চত্বরের দিক থেকে। বেরোনোর পথ দিয়ে ঢুকতে না পারলে, লম্বা ঘুর পথে যেতে হতো টি.এস.সি অব্ধি এবং দাঁড়াতে হতো লম্বা লাইনে। চোট্টামানি করলাম। লেখালেখির সম্মানী পাই না, কপিরাইটের কোনো বাপ-মা নাই, এই চোট্টামানি-টা মাফ করে দিয়েন। প্রথমে গেলাম আমার ‘জুলেখা ট্রিলজি’র প্রকাশক জ... »

Photo By: Adrien Converse | Unsplash

‘নতুন কবি স্মরণে’ বইটির ভুমিকা থেকে

মুখবন্ধ এ কাহিনী আমার নয়। আমার বন্ধু জুঁইফুল চৌধুরীর। জুঁইফুল চৌধুরীকে আপনারা হয়তো অনেকে চেনেন, অনেকে চেনেন না। জুঁইফুল চৌধুরী গত ত্রিশ বছর ধরে সাহিত্যের সেবা করে আসছে। সেবা কথাটা বোধহয় অতিশয়োক্তি হলো। কেন না কথাটার মধ্যে একটা নিঃস্বার্থ দানের ইঙ্গিত উহ্য আছে। জুঁইফুল চৌধুরীর সেবার মধ্যে প্রত্যাশা ছিল। নাম, অর্থ ও প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশা। যা সকল মানুষের মধ্যেই উগ্রভাবে বর্তমান থাকে। মানুষ নিজেকে সীমা... »

মেট্রোপলিটান। জানুয়ারি,২০২০

মেট্রোপলিটান। জানুয়ারি,২০২০

কেদারনাথ রোড দিয়া রাত্তিরে হাঁটবার অবকাশ নাই। তবে, আজকাল হাঁটা যাইতেসে । এর সঠিক কারণটা ভাবতে ভাবতে আমি আমার লক্ষ্যের দিকে আগাই, বাস স্ট্যান্ড যাবো। প্রতি রাত্তিরেই- আমি এমন যাই। কেদারনাথ মেইনরোড কতগুলো শাখায় ভাগ হয়ে যাবার মাথায় আমার বাড়ি। এরপর দীর্ঘ সুনসান আবাসিক টাইপের রাস্তা- কালিবাড়ি বাজার আর, রেলিগেট স্ট্যান্ডকে ধইরা রাখসে। এই রাস্তাটা প্রাচীন। অনেক আগেকার। শোনা যায়, এই কেদারনাথ রোডের ... »

কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অসমাপ্ত আত্মজীবনী – ১১

কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের অসমাপ্ত আত্মজীবনী – ১১

কম্পিউটার স্বাগতম   আমার প্যাকেট থেকে সিগারেট অফার করায় তিনি তা আগ্রহের সঙ্গেই গ্রহণ করলেন। তাঁর মুখের সিগারেটে অগ্নিসংযোগ করলাম, তিনি আমার মুষ্টিবদ্ধ হাতে টোকা দিয়ে ধন্যবাদ দিলেন। বুঝতে পারলাম, ভদ্রতাজ্ঞান টনটনে। গতরাতে শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের বাসায় তাকে যেমনটি দেখেছিলাম, আজকে বেশভূষায় তার সম্পূর্ণ বিপরীত- ক্লিন শেভড বিশাল এক ব্যক্তিত্ব! মনে হচ্ছে, কোনো অনুষ্ঠানের সভাপতি অথবা প্রধান অতিথি সেজে ... »

শাহীন আপা

শাহীন আপা

“আর তাছাড়া ১৪/১৫ বছর তো অনেক লম্বা সময় আর আমরা দুইজন তো আগের দুইজন নেই।” চারপাশে বড় বড় কলোনি বাড়ির মধ্যে আমরা তৈরি করে নিয়েছি আমাদের ‘কৃষ্ণচূড়া চত্বর’। একটা বিল্ডিংয়ের পেছনে খালি পড়ে থাকা জংলা জায়গা পরিষ্কার করে, চারপাশে বেড়া দিয়ে, বেড়ার ভিতরের পাশে লাইন ধরে লাগানো বিভিন্ন ধরনের কুল গাছ। এছাড়া চত্বরটা ভরে আছে আড্ডার প্রত্যেক সদস্যের বাধ্যতামূলক ডোনেশন দেয়া মেহগনি,কড়ই, ইত্যা... »

বেগমবাগ

বেগমবাগ

আজকাল সবকিছু ঝাপসা না হলে নুরুল সত্যটা বলতে পারে না। চারপাশটা ঝাপসে হতে তার অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘ ১৬৮ ঘণ্টা। সাপ্তাহিক ছুটির আগের দিন লাঞ্চের পর থেকে কিছুতেই তার অফিসে মন টেকে না। খাবারও ঠিকমতো খায় না। পেট ভরা থাকলে যদি ঝাপসা কম হয়! আকাশটা আজ অভিমানী প্রেমিকার মুখের মতো অন্ধকার। নুরুলের বুক দুরু দুরু করে। অনেকটা পথ হাঁটতে হবে। এই সময়ে রাস্তায় খুব জ্যাম থাকে। সঙ্গে ছাতা নেই। ভিজে গেলে নির্ঘাত জ্বরে... »